ঢাকাMonday , 26 September 2022
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লাকসাম ৮টি ইউপি’তে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন

Link Copied!

কুমিল্লা লাকসাম উপজেলায় নিষিদ্ধ বরিং ড্রেজার (স্থানীয় নাম আত্মঘাতী ড্রেজার) দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কৃষিজমি থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে শতাধিক ড্রেজার মেশিন প্রতিনিয়ত কৃষি জমির মাটি অথবা বালু উত্তোলন করে চলছে। এ কারণে উপজেলার তিন ফসলি জমি ও কৃষিক্ষেতগুলো একের পর এক বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গ্রামে ড্রেজার মালিক ও বালু ব্যবসায়ীদের স্বেচ্ছাচারিতায় হুমকির মুখে পড়েছে বিপুল সংখ্যক কৃষি জমি। সরকারি খালসহ কৃষি জমিঘেঁষা খালের পাড় থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে গভীর করে বালু ও মাটি উত্তোলন করায় কৃষিক্ষেতগুলো এখন ভাঙ্গনের মুখে। এর ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে উপজেলার পরিবেশ-প্রতিবেশ।

এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধ শতাধিক জমির মালিক বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। নিরুপায় হয়ে তারা এখন ড্রেজার ব্যবসায়ী চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

এ দিকে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি এই ড্রেজার চক্রের কাছ থেকে মাসোয়ারা হিসেবে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি করছে। মাসোয়ারা দিলে সচল থাকে ড্রেজার মেশিন। না দিলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যেমে ড্রেজার মেশিন জব্দ করার ভয় দেখানো হয় চক্রেরটি।পুনরায় মাসোয়ারা দিয়ে তারা আবার সচল করে নেয় তাদের ড্রেজার মেশিন। এখানে কৃষি জমির মালিকের কিছুই করার থাকে না।

লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মাঝে মাঝে স্থানীয় প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যেমে অভিযান চালালেও কোনো রহস্যজনক কারণে ওই ড্রেজার ব্যবসায়ী চক্রগুলোর বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হচ্ছে না। ফলে স্থানীয়দের মুখে এখন একটাই প্রশ্ন, অভিযান কি তাহলে শুধুই লোক দেখানো?

সরেজমিনে দেখাযায়, উপজেলা ৮ টি ইউনিয়নে ১৬৩ টি অধ শতাধিক গ্রামের কোনো না কোনো স্থানে অবৈধ ড্রেজার মেশিন চলছে। বর্ষা ও শুকনো মৌসুমে মাইলের পর মাইল পাইপ সংযোগ দিয়ে ড্রেজিংয়ের মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কোনো ফসলি জমি, পুকুর ভরাট অথবা সড়ক সংষ্কার
কাজ করতে। অন্য দিকে অবৈধ ড্রেজিংয়ের কারণে ৫০-৬০ ফুট গভীর কূপে পরিনত হচ্ছে ড্রেজার মেশিনের আশপাশের তিন ফসলি জমিগুলো।

মোশারফ, আলমগীর, বাবুল মিয়া ও কানাই ব্যাপারীসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী কৃষক বলেন, কেউ যদি ইচ্ছা করে জমি দিতে না চায়, তাহলে সেখানে জোর পূর্বক মাটি কাটা শুরু করে দেয় তারা। তখন কারো কিছু করার থাকে না। অবশেষে ওই ড্রেজার মালিকদের কাছেই কমমূল্যে জমি ছেড়ে দিতে হয়। কৃষকরা আরও জানান, ‘বেশ কয়েকবার অভিযুক্তদের এ কাজে বাধা দেয়া হলেও তারা উল্টো কৃষি জমির মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। কৃষি জমি রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি আমরা।’
ড্রেজার সিন্ডিকেটরা জমির মালিকদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে প্রায় জিম্মি করে রেখেছে।আত্মঘাতী এই ড্রেজার দিয়ে সমতল মাটির তলদেশ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ফসলি জমি দেবে যাওয়াসহ আশপাশের পরিবেশেরও ভয়াবহ ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন,আমি উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত। কেননা তিন ফসলি জমির টপসয়েল (মাটির ওপরের উর্বর অংশ) ব্যাপক হারে কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে চাষাবাদের জন্য এ উপজেলায় একখণ্ড জমিও আর অবশিষ্ট থাকবে না।

লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা মতিন বলেন, ড্রেজার দিয়ে কৃষি থেকে বালু উত্তোলন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে অবৈধ ড্রেজার মালিক ও বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Don`t copy text!