নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি।
১৫ বছর বয়সে চা দোকান দিয়ে কর্ম জীবন শুরু করে।চা তৈরীতে এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেছেন নান্দাইল পৌরসভার কাকচর ২নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা শাহজাহান(৪১)।২০ বছর বয়সে দাম্পত্য জীবন শুরু। বিয়ের দুই বছর পর ঘর আলো করে এক কন্য সন্তানের জনক হয় শাহজাহান। তিন সন্তান ও স্ত্রী রেখা আক্তার কে নিয়ে সুখী জীবন পার করছিলেন। গত করোনাকালীন সময় পার করার পর থেকেই অভাব যেন কোনোভাবেই শাহজাহানের পিছু ছাড়ছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংসার চালাতে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ বহন করে, “সংসার খবর” যেন মরার উপর খাড়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাঁচ সদস্যের সংসার যুদ্ধে, খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে শাহজাহানের পরিবার।
শাহজাহানের সাথে সংসার ও জীবিকার কথা জিজ্ঞাসা করলে, আবেগ আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, আমার যখন বয়স ১৫ বছর তখন থেকেই চা বিক্রি করি। আজ ২৬ বছর পাড় হয়ে গেল চায়ের কাপে। দুই ছেলে এক মেয়ে আর রেখাকে নিয়ে ভালোই যাচ্ছিলো দিন। হঠাৎ করেই করোনার মহামারীতে দিনের পরে দিন দোকান বন্ধ থাকায় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। সামনে বর্ষার সময় আসছে, ভাঙ্গা ঘরে তিন সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে থাকাটাই মুশকিল হয়ে পড়বে। এদিকে আবার বাজারের সব কিছুর দাম বেশি থাকার কারণে তিনবেলা ডাল-ভাত খেয়ে কোন মতে বেঁচে থাকাব, তারও কোন উপায় দেখছি না। আমার মেয়েটা সমূর্ত জাহান মহিলা ডিগ্রি কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী। এক ছেলে চন্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে, আরেক ছেলেকে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করেছি। সংসার খরচের পাশাপাশি তিন ছেলে মেয়ের পড়াশোনা খরছ, “চা বিক্রি” করে জোগাড় করা কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছেনা। গত ২৬ বছর যা উপার্জন করেছি তা সম্পূর্ণ সংসার খরচ, আর ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচেই শেষ। সঞ্চয় বলতে কিছুই নাই আমার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া বসত ঘরের ভিটা-মাটি আমার শেষ সম্বল।

