স্টাফ রিপোর্টার, সৌরাব আলি।।
শিবগঞ্জের সাবরেজিস্ট্রারের অনিয়ম, দূর্নীতির ,ও স্বেচ্ছাচারিতার অজুহাতে মহোরাল সমিতির উদ্যোগে গত ৬ ফেব্রুয়ারী হতে চলছে কলম বিরতি। প্রয়োজনের তাগিদে জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে না পেরে দূর্ভোগ পড়েছে শিবঞ্জের ৮লাখ মানুষ। প্রতিদিন জমি রেজিস্ট্রি করতে এসে সারা দিন পর ফিরে যাচ্ছে ক্রেতা বিক্রেতারা। স্থবির হয়ে পড়েছে সাবরেজিস্ট্রার অফিস এলাকা।
তবে সাবরেজিস্ট্রার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন মহোরাল সমিতি সরকারী আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙঙ্গলী প্রদর্শন করে বিধি বর্হিভ’ত কলম বিরতি চালিয়ে গেলেও জমি রেজিস্ট্রি করার ক্ষেত্রে তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। নিয়মিত জমি রেজিস্ট্রির কাজ চলছে। তবে তিনি বলেন এব্যাপারে জেলা রেজিস্ট্রার তাদের নিয়ে আলোচনায় বসতে চাইলে তারা বসেনি। অন্যদিকে মহোরাল সমিতি তা অস্বীকার করে বলেন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ গ্রহন করেননি।
জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর দলিল লেখক সমিতির পক্ষে আহবায়ক রাকিবুল হকের স্বাক্ষরিত করা গত ১০-০২-২০২২খ্রী: তারিখের আবেদন ও গত ০৮-০২-২০২২ খ্রী: তারিখে সমিতির সহ সভাপতি খাইরল ইসলামের স্বাক্ষরিত জেলা প্রশাসক ববাবর দেয়া স্মারকলিপি সুত্রে জানা গেছে শিবগগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রার ইউসুফ আলি ও তার আজ্ঞাবহ অফিস সহকারী আল মামুন ও মাহোরাল সেলিম রেজার যোগসাজজে জমি রেজিস্ট্রির ক্ষ্রেত্রে স্বেচ্ছাচারিতা, দূব্যবহার ,অনিয়ম ও অনৈতিকভাবে অতিরিক্ত সুযোগ -সুবিধা নিতে মহোরাল সমিতিকে বাধ্য করা ও বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করার প্রতিবাদে তাদের অপসারন দাবী করা হয়েছে ।
দলিল সমিতির লোকজন বলছেন আমরা বার বার অনুরোধ করেও সাবরেজিস্ট্রার ইউসুফ আলি আমাদের কথায় কর্ণপাত না করায় বাধ্য হয়ে সাবরেজিস্ট্রারসহ তিনজনের অপসারনের দাবিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারী হতে কলম বিরতি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কলম বিরতি আন্দোলন চলবে।মহোরাল সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম শিলু, কলম বিরতির কমিটির আহবায়ক রাকিবুল হক সহ সমিতির অন্যান্য সদস্যরা জানান, একমাত্র সাবরেজিস্ট্রার ইউসুফ আলি ও তার আজ্ঞাবহ ভারপ্রাপ্ত অফিস সহকারী আল মামুন ও মোহরার সেলিম রেজার অনৈতিক,অযৌক্তিক ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে কলম বিরতির কারনে শতভাগ দলিল করা বন্ধ রয়েছে। তাদের কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবী না মানায় কলমি বিরতির ফলে সরকার প্রতিদিন প্রায় ৩৫লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
যা একজন সরকারী কর্মর্কর্তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে হচ্ছে। তারা আরো বলেন তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারনে একদিকে যেমন ১৬৫জন মোহরালেরর আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জ জীবনজীবীকা কঠিন হয়ে পড়েছে,অন্যদিকে তেমনি শত শত ক্রেতা- বিক্রেতা প্রয়োজনের তাগিদে জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে না পেরে চরম হায়রানী ও বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। তারা আরো বলেন জেলা রেজিস্ট্রার ও শিবগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রার আমাদের ১০জনের বিরুদ্ধে সাজানো ঘটনায় সাবরেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরনের দায়ে শোকজ নোটিস জারী করে বিধি বর্হিভুতভাবে মাত্র তিনদিনে মধ্যে উত্তর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। যা হয়রানীর আরেকটি পর্যায়।এব্যাপারে শিবগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রার ইউসুফ আলি ও তার অফিস সহকারী আল মামুন ও মহোরাল সেলিমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে সাবরেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী বলেন, মহরোল সমিতির কোন কোন সদস্য মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে সরকারী সম্পত্তি কোন ব্যক্তির নামে দলিল করতে আসলে ঘটনাক্রমে জানা জানি হলে তা বাতিল হয়ে যায়।। শুনেছি তারা এর আগেও এধরনের কাজ করার চেষ্টা করেছেন।
এ ঘটনায় তার ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দাঁড় করিয়ে সম্পূর্ণ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। শুধু তাই নয় তারা সরকারী নিয়ম বর্হিভ’তভাবে কলম বিরতি চালিয়ে যাচ্ছে। আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি ও আমার অফিসের লোকজনকে ভয়ভীতি ও গালিগালাজ দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে আমি আইনগত ভাবে গত ৯ ফেব্রুয়ারী খ্রী: তারিখে তাদের ৯জনের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ করেছি এবং আমার জেলা রেজিস্ট্রার ১ জনের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ জারি করেছেন। আমি সমস্ত ঘটনাই আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তিনি এব্যাপারে তাদের নিয়ে আলোচনায় বসার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তারা কোন সাড়া দেননি। তিি আরো বলেন যেহেতু দলিল লেখার ক্ষেত্রে কোন ক্রেতা-বিক্রেতা মহোরালের কাছেই লিখতে বাধ্য নয়। তারা ইচ্ছা করলেই নিজেই দলিল লিখে জমি ক্রয় –বিক্রয় করতে পারেন। সেহেতু জমি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন খারাপ প্রভাব পড়েনি। বরং স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিনই জমি ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। সরকারী রাজস্ব ঠিকমত আদায় হচ্ছে। এব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বী কোন মন্তব্য করতে রাজী না হয়ে জেলা রেজিস্ট্রারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। জেলা রেজিস্ট্রার আলী আকবর বলেন, তাদের এ কলম বিরতি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অনৈতিক।সাবরেজিস্ট্রার অফিসের কোন মহোরাল সমিতি কোন সরকারী কর্মকর্তার অপসারণ দাবীতে কলম বিরতি চালাতে পারেন না। কোন অভিযোগ থাকলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারেন এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সে মোতাবেক তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। তিনি আরো বলেন তাদের কলম বিরতির ফলে জমি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন প্রভাব পড়েনি এবং রাজস্ব আদায়ের কোন ঘাটতি হয়নি। সবকিছু নিয়ম অনুসারে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন উভয় পক্ষের আবেদন আমি আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তারা তদ। সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।